Select Page

ইংরাজী বর্ণমালার ইতিহাস

ইংরাজী বর্ণমালার ইতিহাস

আপনারা সবাই মোটামুটি ইংরাজী বর্ণমালা সম্বন্ধে অবগত আছেন জানি নূতন কি বলার আছে? আমি যদি জিজ্ঞেস করি যে ইংরাজী বর্ণমালার অক্ষর কটি, সবাই একযোগে বলে উঠবেন কটি আবার ছাব্বিশটি। এটা আবার প্রশ্ন হলো নাকি?

এখন যদি আমি বলি গোড়ায় ইংরেজী বর্ণমালা তে মোটেই ছাব্বিশটি অক্ষর ছিল না তখন অনেকে ভুরু কুঁচকে ভাবতে বসবেন যে এ ব্যাটা নিশ্চয় কিছু ফান্ডা দেখাবে এবার।

সত্যি তাই। ইংরাজী বর্ণমালা যুগে যুগে অনেক বদলেছে। আসুন এই বদলের ইতিহাসের পাতাগুলো একটু উল্টে পেছনে যাই।

ইংরাজী সাহিত্যের জনক বা আদি পুরুষ যাকে বলা হয় সেই চসারের যুগে ইংরাজী বর্ণমালা ছিল ২৫টি। তখন ইংরাজী J ছিল না। ‘I’ আর J’ একছিল। পরে I থেকে J আলাদা হয়ে ছাব্বিশটি বর্ণ হয়।

এবার আসি S নিয়ে। গোড়ায় ইংরাজী তে দুটো S এর ব্যবহার ছিল। আমাদের বাংলা হ্রস্ব উ আর দীর্ঘ ঊ এর মতো। একটা ছিল লম্বা এবং একটা ছিল ছোট। লম্বা S ছিল এখনকার ব্যবহারের s ছাড়া একটু অন্য রকম। একে বলা হতো লং (long) বা মিডায়াল (medial) বা ডিসেন্ডিং (descending) s।

পরিচিত s টির নাম ছিলো শর্ট (short), টারমিনাল (terminal) বা রাউন্ড (round) s। এই দুই এস-এর কোনটি কখন ব্যবহৃত হবে তার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ছিল। যেমন শব্দে একটি এস থাকলে তা হবে লং এস। কিন্তু কোনো শব্দে দুটি এস হলে প্রথমটি হবে লং এস এবং দ্বিতীয়টি হবে শর্ট এস।এছাড়াও আরো বেশ কিছু জটিল নিয়ম এবং ব্যতিক্রম কিছু।

এই লং S দেখতে অনেকটা ছিল বর্তমান f এর মত। এর বহুল ব্যবহার সপ্তদশ শতাব্দী এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ৫০ বছর অব্দি দেখা যায়।

জন মিল্টনের ১৬৬৮ সালের প্রকাশিত সংস্করণে পাওয়া যায়। Paradise Lost নাম লেখা ছিল Paradife Loft.

আরো আছে এরকম। যেমন Design বানান লিখা হত defign রূপে। অর্থাৎ একটা S এর ব্যবহার থাকলে এই লং S ব্যবহৃত হত। আর যেখানে দুটো S পরপর লিখা হত তখন দ্বিতীয় স্থানে সর্ট S অর্থাৎ বর্তমানে প্রচলিত S লিখা হত। যথা Lofs অথবা Kifs।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার ৫ম সংস্করণ ১৮১৭ সালে প্রকাশিত। ব্রিটানিকার এই ৫ম সংস্করণেই আমরা সর্বশেষ দেখতে পাই লং এস। তারপর থেকে লং এস-কে বাদ দিয়ে ফেলে শুধু শর্ট এস-এর ব্যবহার শুরু হয়। ১৮২৩ সালে প্রকাশিত ৬ষ্ঠ সংস্করণ, কোনো লং এস নেই।

এতে মনে হয় উনবিংশ শতকের প্রথম পাদে লং S এর ব্যবহার ধীরে ধীরে বর্জিত হয়। শুরুর দিকে এভাবেই একে একে কমে আসতে থাকে লং এসের ব্যবহার। তৎকালীন ভাষাবিদদের দাবি ছিল, এতে করে ভাষা আরো সহজ সাবলীল হয়েছিল। প্রিন্টিং প্রেস এবং মেশিনগুলো দুটো এসের বদলে শুধুমাত্র শর্ট এস ব্যবহার করছিল। কারণ f এর সাথে লং এস এর পার্থক্য করা খুব মুশকিল ছিল।

তবে হাতের লেখায় এ পরিবর্তন আসতে আরো অনেক সময় লাগে, উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধেও লং এসের ব্যবহার পাওয়া যায়।

আরো অনেক কিছু আছে। এখন আমরা আরো দুই একটি বর্ণ আর ওগুলোর ব্যবহার কিভাবে হয় বা হতো তা বোঝাতে চেষ্টা করব।
এবার শুরু করি তাহলে। প্রথম বর্ণের নাম হলো Ampersand. শোনা আছে এই শব্দ? অনেকে হয়ত শুনেছেন আবার অনেকের হয়ত অজানা।

এটা ছিল ইংরাজী বর্ণমালার সাতাশতম অক্ষর। এটা আপনারা সবাই চেনেন কিন্তু এই নাম বা এটা যে বর্ণমালাতে ছিল তা হয়ত জানেন না। Ampersand লিখা হয় এভাবে


&

হ্যাঁ এটার নাম ampersand আর এই নাম হওয়ার ইতিহাস ও মজার। বর্ণমালা তে X, Y, Z, & এভাবে ছাপা হলেও ব্রিটেনে ছোট বাচ্চারা সুর করে নার্সারি রাইমের মত পড়ত। যথা X Y Z and per se end. অর্থাৎ ল্যাটিনে per se মানে by itself. অর্থাৎ Z এর পর by itself end. কারণ &, মানে and.

এই রাইমের সুর এত বিখ্যাত হয়ে পড়ে যে ১৮৩৫ সালে তৎকালীন ভাষাবিদরা এই অক্ষর বর্ণমালা থেকে বাঁ দিতে বাধ্য হন। কিন্ত এই অক্ষরের ব্যবহার আজও আছে।

এবার বলব অধুনা লুপ্ত আরেক বর্ণ সম্বন্ধে। এই বর্ণের নাম হল থর্ন। এই থর্ন ( thorn) দেখতে খানিকটা p এর মতো হলেও সামান্য পার্থক্য ছিল এর। একে লেখা হতো এভাবে, Þ বা þ। TH এর স্থলে ব্যবহৃত হতো থর্ন। যেমন, the কে লেখা হতো ‘þe’। কিন্তু মজার কথা হলো ইতালী এবং
জার্মান টাইপরাইটারে þ না থাকায় ওরা þ এর বদলে Y লেখতে থাকেন। পুরোনো ইতালীয় বা জার্মান শহরের সাইনবোর্ড গুলো লেখা হত এভাবে :

Ye olde hotel বা Ye pork pie shoppe ইত্যাদি । এ স্থলে Ye মানে The মনে রাখতে হবে।

এবার আমরা আরো একটু এগোব। আরো কিছু হারিয়ে যাওয়া অক্ষর বা বর্ণ নিয়ে একটু আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাই।

এবার আসব That নিয়ে। এখন আমরা চার চারটি বর্ণ দিয়ে that শব্দটি লিখে প্রকাশ করি। কিন্তু অষ্টাদশ শতকের আগে কত সহজে That লিখা হত দেখুন একবার :


-þ-

থর্ন এবং অ্যাম্পারস্যান্ড বর্ণ দুটির সাথে বেশ মিল ছিলো এ বর্ণটির। দেখতে থর্নের মতো, বাড়তি একটি দাগ এবং অ্যাম্পারস্যান্ডের মতো ‘that’ শব্দটির বিকল্প হিসেবে এটির ব্যবহার হতো, তাই এর নামটিও ছিলো that। এই থর্নের মাথা কাটা থাকত এবং that শব্দটি ঐ একটা অক্ষরে লিখা হত। পুরোনো বাইবেলে এই অক্ষরের বহুল ব্যবহার পাবেন।

এখন আরেকটা বর্ণ দেখাব আপনাদের। এটার নাম এথ ( Eth) । এথ লিখা হত এরকমভাবে :


ð Ð

এথ বর্ণটিও ব্যবহৃত হতো TH বোঝাতে, তবে একটু অন্য রকম TH। ফোনেটিক্স অনুসারে TH এর উচ্চারণ দু’ভাবে হতে পারে। প্রথমত, Thing এর উচ্চারণ ‘থিং’ এবং Other এর উচ্চারণ ‘আদার’।

শেষোক্ত TH এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো ð বা Ð।

আমাদের আলোচনার পরবর্তী বর্ণ হলো এশ( ash ) বা অ্যাশ । অ্যাশ (ash) লেখা হত এভাবে :


æ

a এবং e এর মাঝামাঝি উচ্চারণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো æ বা অ্যাশ। যেমন: cat কে লেখা হতো cæt। পুরাতন ইংরেজিতে অ্যাশ বর্ণমালার অংশ ছিল এবং আঠারো শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে এর ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে।

এবার আমরা বাকী কয়টি হারিয়ে যাওয়া বর্ণের আলোচনা করব।
১) ইথেল (Ethel)
ইথেলকে প্রকাশ করা হতো এভাবে-


œ

দেখতে যেহেতু অ্যাশ-এর মতো, উচ্চারণও হতো তেমন। কিন্তু খানিকটা দীর্ঘ করে। আমাদের হ্রস্ব-ই এবং দীর্ঘ-ই-র মতো। তবে লাতিন বা গ্রিক উৎপত্তি হিসেবে কখনও ইথেল এবং কখনও অ্যাশ ব্যবহৃত হতো।

উদাহরণ :- subpœna এবং fœtus

২) উইন (wynn)
আধুনিক ইংরেজির সূচনালগ্নে উু বা ওয়া প্রকাশ করার মতো কোনো বর্ণ ছিল না। তাই তারা প্রথমে
শুরু করেছিল দুটো ছোট হাতের ইউ (uu) এক সাথে লিখে। কিন্তু বেশিরভাগ ভাষা পণ্ডিতেরই
সেটি পছন্দ হয়নি। তারা এর বদলে প্রস্তাব করেছিলেন এই বর্ণ টি। যথা :


উইন (ƿ)

তবে সাধারণ লোকে এই নতুন বর্ণটিকে গ্রহণ করেনি। তারা দুটি ইউ একত্রে লিখতে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে তা সামান্য পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হয় আমাদের অতি পরিচিত ডাবল ইউ, অর্থাৎ


W

আশ্চর্যের বিষয় যে আমরা W কে double U উচ্চারণ করে পুরোনো প্রথা কে মনে রেখেছি।

৩) ইয়ঘ (yogh)
খ বা ঘ জাতীয় উচ্চারণ বোঝাতে ব্যবহৃত হতো ইয়ঘ । এই ইয়গ দেখতে ছিল এরকম :


ȝ

কিন্তু দেখতে ইংরেজি সংখ্যা 3 এর মতো হওয়াতে তা বেশিদিন টেকেনি। এর বদলে ব্যবহৃত হতে থাকে ‘gh’। gh যে কারণে একত্রে বসতো, আধুনিক ইংরেজিতে তা-ও কমে হয়ে আসে দিন দিন। পরিবর্তিত হয়ে যায় gh এর উচ্চারণ।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে নাম এখনও এরকম হয়। যথা Mark Wogh বা Steeve Wogh. এবং শেষ বর্ণ হচ্ছে
৪) এং(eng)

আলেকজান্ডার ফিন্দালের আবিষ্কার এই বর্ণ টি। ১৬১৯ সালে এর ব্যবহার শুরু হয়। এই বর্ণ
দেখতে ছিল এরকম :


(ŋ)

যেসব শব্দ ng দিয়ে শেষ হয়, যথা thing, King, Ming ইত্যাদিতে ng র পরিবর্তে এই এং ব্যবহার করা শুরু হয়। কিন্তু এটা বেশীদিন চলেনি। কারণ এটা দেখতে প্রায় n এর মতো হওয়ার জন্য প্রিন্টিং প্রেসে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। প্রায়ই (ŋ) র বদলে n ছাপা হয়ে যাচ্ছিল এবং অচিরেই এটা পরিত্যক্ত হয়।

শেষ পর্যায়ে আরেকটা শব্দ সম্বন্ধে বলব। অনেক আগে Girl শব্দটি উভলিঙ্গ হিসাবে ব্যবহৃত হত। কারণ boy শব্দ সাধারণত হোটেলের বেয়ারাদের বলা হত। তাছাড়া বালক বা বালিকার জন্য Lad এবং lass তো ছিলই। পরে ধীরে ধীরে boy শব্দটি girlএর বিপরীতে masculine gender এ পরিনত হয়।

পূর্বোক্ত সব বর্ণই অ্যাংলো স্যাক্সন আমলের ভাষাতে ব্যবহার করা হত যারা বর্তমান ইংরেজদের পূর্ব পুরুষ ছিলেন।

২ Comments

  1. তাহের আলমাহদী

    আপনার লেখাটি পড়ে ভাল লাগল। সাধারণ ইংরেজিতে &, þ, ð, Ð, æ, œ, ƿ, ȝ, ŋ —এই সকল বর্ণ বর্তমানে ব্যবহৃত না হলেও ল্যাতিন লিপিতে বর্ণগুলো রাখা হয়েছে। ইংরেজি ছাড়াও ল্যাতিন লিপিতে আরও অনেকগুলো ভাষা লেখা হয়, তাই এই লিপিগুলো অন্যান্য ভাষাতে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।

    Reply
  2. Sanjoy sharma roy

    Thanks for the enlightenment..

    Reply

মন্তব্য করুন

Subscribe to Blog via Email

Enter your email address to subscribe to this blog and receive notifications of new posts by email.

Join 4 other subscribers

সংরক্ষণাগার

%d bloggers like this: